উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মোকাররম হোসেন সুজন। কিন্তু আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগের কারণে শপথ নিতে পারেননি তিনি। অন্ধকার কাটিয়ে আলোর মুখ দেখেন তিনি, আদালতের নিষেধাজ্ঞা শেষে ৬৬ দিন পর সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে শপথ নেন। তবে সে সুখ বেশি সময় সইলো না কপালে।
শপথ গ্রহণ করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে উপসচিব মো. আকবর হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেই প্রজ্ঞাপনে দেশের ৪৯৩ উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্ব স্ব পদ থেকে অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলারও নাম রয়েছে।
জানা গেছে, রংপুরের গংগাচড়া উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সোমবার (১৯ আগস্ট) শপথ গ্রহণ করেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মোকাররম হোসেন সুজন। সকালে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে শপথ বাক্য পাঠ করান রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন।
এদিকে গত ২৯ মে তৃতীয় ধাপে গংগাচড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনকে ৮৩৩ ভোটে পরাজিত করেন মোকাররম হোসেন সুজন। গত ৪ জুন গেজেট প্রকাশিত হয় এবং ৩ জুলাই শপথের দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু ১৩ জুন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে শপথের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল জেলা যুগ্ম জজ আদালত-১-এ মামলা করেন পরাজিত প্রার্থী রুহুল আমিন। এতে ২৩ জুন শপথের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন আদালতের বিচারক মো. আব্দুল মালেক। পরে ১৪ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে শপথ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এরই প্রেক্ষিতে রবিবার (১৮ আগস্ট) রংপুর বিভাগের স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আজ সোমবার সকালে শপথ গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। সেই নির্দেশের আলোকে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর অপসারণে তার চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালনের স্বপ্ন ভেঙে যায়।
এ বিষয়ে মোকাররম হোসেন সুজন গণমাধ্যমকে জানান, সরকার যেহেতু সব উপজেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাই এ বিষয়ে আমার প্রতিক্রিয়া নেই।
উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে মোকাররম হোসেন সুজন ২৯ হাজার ৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি তাকে অব্যাহতি দিয়েছে।