বর্তমান বিশ্বে নেতৃত্বের ধারণা অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। নেতা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা অনেকের মধ্যেই আছে, কিন্তু প্রকৃত নেতা হতে হলে শুধুমাত্র পদ বা ক্ষমতা অর্জনই যথেষ্ট নয়। নেতৃত্বের আসল শক্তি হলো নীতি ও মূল্যবোধ। সঠিক নীতি একজন মানুষকে প্রকৃত অর্থে নেতা বানায়। শিরোনামের মূল বক্তব্যও তাই—নেতা হতে চাইলে প্রথমে নিজের নীতির পরিবর্তন করতে হবে, কারণ শক্তিশালী নীতি-ই একজনকে দীর্ঘস্থায়ী নেতৃত্ব দিতে পারে।
আজকের সমাজে আমরা প্রায়ই দেখি যে অনেকে ক্ষমতার পেছনে ছুটে নীতি বিসর্জন দিচ্ছেন। তাৎক্ষণিক সুবিধা বা ক্ষমতার মোহে পড়ে নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হচ্ছেন। এই ধরনের নেতৃত্ব সাময়িক সাফল্য বয়ে আনতে পারে, কিন্তু এর স্থায়ীত্ব নেই। একজন প্রকৃত নেতা তার নীতির প্রতি বিশ্বস্ত থাকেন এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে জনগণের কল্যাণকেই প্রাধান্য দেন। যিনি নীতি ও আদর্শের প্রতি অবিচল থাকেন, তিনিই শেষ পর্যন্ত অনুসরণীয় হয়ে ওঠেন।
আমাদের ইতিহাসে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যেখানে মহান নেতারা তাদের নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে চিরস্মরণীয় হয়েছেন। মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা—এই নেতারা কখনো নীতির সঙ্গে আপস করেননি, এবং এজন্যই তাঁদের নেতৃত্ব মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে আছে। তাঁরা শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য বিখ্যাত হননি, বরং তাঁদের নৈতিকতা এবং নীতিগত দৃঢ়তার জন্যও শ্রদ্ধেয় হয়েছেন। তাঁরা দেখিয়েছেন, ব্যক্তিগত স্বার্থকে ত্যাগ করে সমাজের বৃহত্তর কল্যাণের জন্য কাজ করাই প্রকৃত নেতৃত্বের পরিচয়।
প্রকৃত নেতা হওয়ার জন্য, সবার আগে নীতি এবং মূল্যবোধে দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন। যখন আপনি নীতি পরিবর্তন করবেন এবং সেটিতে স্থির থাকবেন, তখন মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আপনাকে নেতা হিসেবে মেনে নেবে। শক্তিশালী নীতি এবং এর প্রতি প্রতিশ্রুতি শুধুমাত্র একজনকে নেতা বানায় না, বরং তাঁকে অনুসরণীয় করে তোলে।
সঠিক নীতির অনুসরণ এবং মূল্যবোধের প্রতি অটল থাকা একটি নেতার সবচেয়ে বড় সম্পদ। নেতৃত্ব আসলে ক্ষমতার নয়, নীতির প্রতিফলন। নেতা হওয়ার আগে নিজের নীতিকে সঠিক পথে গড়ে তুলুন—তাহলেই আপনি প্রকৃত অর্থে একজন সম্মানিত নেতা হতে পারবেন।
এই কারণেই বলা হয়, নীতিই একজন মানুষকে নেতা বানায়।